আজ দুই বছর আগের একটা গল্প শোনাব আপনাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযে ভর্তি
পরীক্ষা দিতে আসে গ্রাম থেকে আমার এক আত্মীয়া । বয়স ১৮ এর কিছু বেশি হবে ।
সে আসার পর তার মা আমাকে বিস্তারিত ফোন করে জানায় । দুর্দান্ত কষ্টকর
প্রদরে আক্রান্ত । যাই হোক তাকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে লজ্জায় বলতে চায় না ।
তার পর আমি কয়েকটি প্রশ্ন করলে সে আমাকে কাগজে লিখে বিস্তারিত জানায় ।
আপনাদের বুঝার সুবিধার জন্য আমি হুবহু তার লেখাটি নিচে লিখলাম :
"প্রথম যখন মাসিক হয়েছিল তখন সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। কিন্ত পাচ বছর আগে
আমি একদিন পুকুর ঘাটে মাথা ঘুরে পড়ে যাই এবং সেই থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন
ধরনের উপসর্গ। এক মাস পর পর এবং আড়াই দিন থাকে। এর বেশিও না কমও না। প্রথম
প্রথম কোমরে প্রচন্ড ব্যথা হত এবং মাথা ঘোরত মাসিকের সময়।
প্রথম প্রথম হালকা জমাট বাধা রক্ত নির্গত হত এবং তা কালো বর্ণের ছিল না।
রক্তের রং তখন লাল ছিল। মাসিক চলা কালীন সময়ে মাথা ঘোরত, বমি বমি ভাব হত।
কোমরে এবং পেটে দারুন ব্যথা হত। এখন চলা ফেরা এবং হাটতে কষ্ট হয়। এমনকি
বসে খেতে পর্যন্ত কষ্ট হয়। আর মাসিকে কালো জমাট বাধা রক্ত নির্গত হয়। এখন
জমাট বাধা রক্তই বেশি নির্গত হয়। দুইজন এলোপাথিক ডাক্তার বলেছে আমার নাকি
রক্ত শুন্যতার কারণে প্রতিমাসে পরিস্কার ভাবে বের হয় না এবং পরের মাসে সেটা
জমাট বেধে বের হয়। আর মাঝে মধ্যে জমাট সাদা প্রদর নির্গত হয়। আড়াই বছর
অনেক কবিরাজি ঔষধ খেয়েছি এবং তাবিজ ব্যবহার করেছি। কোন ফল হয় নাই।
আরেকটা সমস্যা হলো গোসলের শেষে পানির মত সাদা স্রাব হয়। প্রতিদিন হয়
কিন্ত আগে ছিল না। ইদানিং সারা পিঠে প্রচন্ড ব্যথা হয়, মনে হয় যেন
মেরুদন্ডটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই সময় বসে থাকতে কষ্ট হয় আর আমার পায়খানা
পরিস্কার হয় না। দুই তিন দিন পর পর হয় এবং পেটে গ্যাস জমে থাকে। দয়া করে
আমাকে কোন প্রশ্ন করবেন না। অর্থাৎ আমার কাছে কোনো কথা বলতে লজ্জা বোধ
করছে । "
যাই হোক আপনারা হয়ত খেয়াল করবেন পুকুর ঘাটে মাথা ঘুরে পড়ে যায় যখন তখন
থেকেই তার ইনফেকশনটা হয় আর প্রপার ট্রিটমেন্ট না করার কারণে রোগটা ক্রনিক
হয়ে গেছে। তার জন্য অনেক কষ্ট করছে। অবস্থা বিচার পূর্বক আমি তাকে
হোমিওপ্যাথি ঔষধ কিনে দেই । সে বাড়ি চলে যায় ।
ঠিক আট দিনের মাথায় গ্রাম থেকে একটা ফোন পাই । শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে
গেলাম । সে এখন পুরোপুরি সুস্থ। আমি এত তারাতাড়ি আর কাউকেই শ্বেত প্রদর বা
সাদা স্রাব, রক্ত প্রদর থেকে সুস্থ হতে দেখি নি । যাই হোক আমি তাকে দুই
মাসের ঔষধ কিনে দিয়া ছিলাম । তাই বললাম ঔষধ গুলো কন্টিনিউ করতে।
আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন হোমিওপ্যাথিই একমাত্র চিকিত্সা পদ্ধতি যা যেকোন
রোগের মূলকে নির্মূল করতে সক্ষম । একবার যেটা ভালো হয় সেটা আর হয় না । যাক
আজ এ পর্যন্তই কোন কথা থাকলে আমাদের নম্বরে ফোন করে জেনে নিবেন। ধন্যবাদ।
Leave your comment
Post a Comment